উদার গনতান্ত্রিক দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা।পৃথিবীর সব দেশের সকল বর্ণের মানুষদের সমান অধিকার দেওয়ার অঙ্গিকার করে ১৮ ডিসেম্বর ১৯৯৬ সালে দেশটির নতুন সংবিধান রচিত হয়েছিলো।সকল মানুষের মানবিক মর্যাদা,সমতা অর্জন, মানবাধিকার,স্বাধীনতা,সকল ধর্মের লোকদের স্বাধীনভাবে ধর্ম পালনের অধিকার সহ অ-বর্ণবাদ এবং নন-লিঙ্গবাদ

সংবিধানের মূল বিষয়বস্তু হিসাবে সংযোজন করে নতুন দক্ষিণ আফ্রিকার সংবিধান রচনা করেছিলেন প্রয়াত রাস্ট্রপতি নেলসন ম্যান্ডেলা।যা ১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭ সালে কার্যকর হয়েছিল।

১৯৯৭ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকায় সংবিধান অনুযায়ী সকল দেশের সকল ধর্ম বর্ণের মানুষ তাদের নাগরিক সুবিধা ভোগ করে আসছিল।এই ১১ বছর দেশটিতে তেমন কোন সমস্যার সম্মুখীন হয়নি অভিবাসীরা।অভিবাসীদের উপর কোন হামলা,নির্যাতন কিংবা লুটপাট ছিলনা।এখনো সরকারি ভাবে কোন অভিবাসীকে নির্যাতন করা হয়না।সংবিধান এবং সরকার ঠিক থাকলেও অবাধ্য কৃষ্ণাঙ্গদের দমানো পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজ।

কিন্তু ২০০৮ সালের পর থেকে কৃষ্ণাঙ্গরা বিভিন্ন অজুহাতে লুটপাট করে নেয় অভিবাসীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।গনতান্ত্রিক দেশের সংবিধানে ফৌজদারী কার্যবিধিতে অপরাধীর অপরাধ বিবেচনা না করে অপরাধীকে একজন মানুষ হিসাবে বিবেচনা করায় অপরাধী অপরাধ করার পরও পার পেয়ে যায়।এই পার পেয়ে যাওয়ার কারণে কৃষ্ণাঙ্গরা প্রতিবছর শীত মৌসুম আসলেই বিভিন্ন ইস্যু তৈরি করে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে অভিবাসীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর এবং লুটপাট করে নিঃস্ব করে অভিবাসীদের।

২০০৮ সাল থেকে চলে আসা কৃষ্ণাঙ্গদের এই লুটপাট প্রতিবছর সারাদেশে ধারাবাহিক ভাবে চলে থাকে।দেশের ৯টি প্রদেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অভিবাসীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মূল টার্গেটে পরিনত হয় কৃষ্ণাঙ্গদের।সরকারের কাছে বিভিন্ন দাবি দাওয়া আদায়ের নামে লুটপাট করে অভিবাসীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।কৃষ্ণাঙ্গদের ভয়াবহ লুটপাটের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও অসহায় হয়ে পড়ে।কাজে আসেনা পুলিশের কোন প্রতিরোধ।পুলিশের সামনেই চলে লুটপাটের তান্ডব লীলা।

এমনিতেই দক্ষিণ আফ্রিকায় বেকারের সংখ্যা সবসময়ই বেশি। কর্ম বিমুখ কৃষ্ণাঙ্গরা বেকারত্ব ঘুচাতে কাজের চাইতে নানা ধরনের অপরাধ কর্মকান্ড করতে পছন্দ করে বেশি।এর মধ্যে গত বছর থেকে করোনা মহামারীর কারণে ৭৪ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ বেকার হয়ে পড়েছে।করোনা মহামারীতে বেকার হয়ে যাওয়া কৃষ্ণাঙ্গরা গত সাপ্তাহ থেকে আজ মঙ্গলবার পর্যন্ত সমানে লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে অভিবাসীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।ফ্রী স্টেইট প্রদেশের ব্লুমফন্টেইন থেকে শুরু হওয়া লুটপাট ছড়িয়ে পড়ছে ইস্টার্ণ কেপ প্রদেশ,নর্থ ওয়েস্ট প্রদেশ ও জোহানেসবার্গ এলাকায়।এসব এলাকায় ইতিমধ্যে লুটপাট চালিয়ে অসংখ্য অভিবাসীকে নিঃস্ব করে দিয়েছে।লুটপাটের শিকার হয়ে নিঃস্ব হওয়া অভিবাসীদের মধ্যে অধিকাংশ আবার বাংলাদেশী নাগরিক।

আশংকা করা হচ্ছে লুটপাট সারাদেশে ছড়িয়ে পড়তে পারে।তাই আসুন নিজেরা নিজেদের আত্মরক্ষা মূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে দোকানে আপাতত মাল ক্রয় করা বন্ধ রাখি।টাকা পয়সা,পাসপোর্ট,এ্যাসাইলম সরিয়ে রাখি। স্হানীয় কমিউনিটির সাথে সুসম্পর্ক গড়ে তুলি।